প্রতিদিন কেউ আমার পিছু পিছু হাঁটে।
অনুসরণ করে বেড়ালের মতো নিঃশব্দে।
মানুষ অথবা অন্য কিছু। কথা বলে না।
অথবা বোবাও হতে পারে।
ইশারায় ডাকে না, স্পর্শ করে না, যেন স্পর্শেও ঘৃণা,
কে হাঁটে? ভিন্ন গ্রহের কোনো প্রাণী?
আমার হাঁটার গতির সঙ্গে তার গতির বড় মিল।
আমার সামনে নদী, হায়, আমি সাঁতার জানি না।
তবু নৌকায় চড়ি না,
পুরনো পাটাতন ভেঙে যায় মিথ্যে ভালোবাসার মতো,
জলে পা রাখতেই আমার পা-জোড়া কী অদ্ভুত লম্বা হয়ে যায়,
ভরা নদীর থই থই জল হাঁটুর কাছে গড়াগড়ি খায়,
অস্ট্রিচ পাখির ডানার মতো দু'হাত বড় হতে হতে
ছুঁয়ে যায় দু'পাশের কালো দিগন্ত,
আমি আকাশ ছুঁতে পারি,
আঙুলে তুলে আনতে পারি শ্রাবণের মেঘ।
তবুও বুঝি কেউ আমাকে প্রতিদিন অনুসরণ করে,
যেন বাঘের পেছনে ফেউ, আমি জানি
পেছনে ঘুরে তাকালে আমার জোড়া-চোখ আগুন হয়ে
জ্বলতে থাকবে ভাটার মতো,
জিহ্বা বেরিয়ে আসবে কালী দেবীর মতো তিন-হাত,
আশি ইঞ্চি দীর্ঘ বুক নিয়ে আমি হয়ে উঠব
অতিকায় বিধ্বংসী মানব, তবুও কি ভয় পাবে না?
আমার পিছু পিছু হাঁটছে অদ্ভুত ছায়া-প্রচ্ছায়া
অথবা অতৃপ্ত প্রেতাত্মার মতো কেউ,
নখ-দন্তে খামচে-খাবলে তুলে নিচ্ছে আমার শিল্পিত পদচিহ্ন।
আমি আস্তে আস্তে ড্রাগনের মতো মাথা তুলে
কখন যে দাঁড়িয়ে যাব অনুসরণকারী টেরও পাবে না,
আমিও তো অসুখী আত্মার মতো তার পেছনেই দাঁড়িয়ে আছি।
No reviews yet.